স্টাফ রির্পোটার
আফগানিস্তানের সশস্ত্র সংগঠন তালেবান দেশটির শহরগুলোর ভেতরে যুদ্ধ করতে চায় না। মঙ্গলবার টুইটারে প্রকাশিত তালেবানের জ্যেষ্ঠ এক নেতার বার্তায় এই ঘোষণা দেয়া হয়।
আমির খান মুত্তাকি নামের এই নেতা বলেন, ‘পাহাড় ও মরুভূমি থেকে যুদ্ধ এখন শহরগুলোর দরজায় এসে পৌঁছেছে। মুজাহিদরা শহরের ভেতরে লড়াই করতে চায় না।’
তিনি বলেন, ‘উত্তম হবে আমাদের দাওয়াত ও গাইডেন্স কমিশনের সাথে যে কোনো সম্ভাব্য সংযোগ ব্যবহার করে যোগাযোগ করে শহরগুলোকে রক্ষার জন্য যুক্তিযুক্ত চুক্তিতে আসা।’
এদিকে ভিন্ন এক বিবৃতিতে তালেবান জানিয়েছে, মার্কিন নেতৃত্বের ন্যাটো জোটের সৈন্যদের আফগানিস্তান ছাড়ার মুহূর্তে কাবুলের বিমানবন্দর রক্ষায় তুরস্কের অবস্থানের সিদ্ধান্ত ‘নিন্দনীয়’।
এতে বলা হয়, ‘এই সিদ্ধান্ত অবিবেচনাপ্রসূত, আমাদের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘনকারী এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থের বিরোধী।’
এর আগে তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়ে সম্মতি জানায়।
এরই মধ্যে তালেবান আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানের নিয়ন্ত্রণ নেয়া শুরু করেছে। তালেবানের তথ্য অনুসারে, দেশটির ৮৫ ভাগ এলাকা বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ তালেবানকে আফগানিস্তানে যেকোনো প্রকার সামরিক বিজয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই ধরনের উদ্যোগ তালেবানকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে।
তালেবান নেতারা জানিয়েছেন, তারা এই ধরনের কিছুই করছেন না।
আফগানিস্তানে নির্ধারিত শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যর্থ করার জন্য সরকারকে দায়ী করছে তালেবান।
তালেবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বার্তা সংস্থা এপিকে এক সাক্ষাতকারে বলেন, ভিন্ন ভিন্ন তিন নির্ধারিত বৈঠকে দোহায় তালেবান প্রতিনিধি দল কাবুল থেকে সরকারি প্রতিনিধি দলের অপেক্ষায় থাকলেও তারা আসেননি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট আফগান কর্মকর্তারা জানান, দোহায় এই ধরনের বৈঠক নির্ধারণের বিষয়ে তারা অবগত আছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তারা জানান, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এই বৈঠকে অনাগ্রহী এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিরোধী ছিলেন।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগান নেতাদের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দশকের পর দশক চলা যুদ্ধের সমাপ্তি এখন আফগানদের হাতেই রয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারে জো বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে ইতোমধ্যেই ৯০ ভাগ সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের প্রধান জেনারেল স্কট মিলার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।
আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সব সৈন্য প্রত্যাহারের কথা রয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা
কমেন্ট করুন