1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. banglarmukh71@gmail.com : admin1 :
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ

ভালো নেই নন এমপিও প্রতিষ্ঠাণের শিক্ষক-কর্মচারীরা

  • আপডেট করা হয়েছে সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১
  • ১১১৩ বার পড়া হয়েছে

         কাজী খোরশেদ আলম
শিক্ষার আলো প্রজ¦লিত করতে দীর্ঘদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে শিক্ষকরা। তারা কাদা মাটির মতো করে আপন হাতের ছোয়া দিয়ে একটি শিশুকে মানুষের মতো মানুষ করার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে যাচ্ছে। নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে,স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার পরিজনের কথা চিন্তা না করে অন্যের সন্তানকে মানুষ করার দায়িত্ব নিয়ে সমাজ ও দেশের কল্যাণে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড-আর এই মেরুদন্ডকে মজবুত করার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে শিক্ষক সমাজ। শিক্ষা প্রদীপ্ত শিখা প্রজ্জ্বলন করতে এবং দেশ-মাতৃকাকে ভালবেসে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে শিক্ষক শ্রেনী। অথচ একই দেশে চলছে দ্বৈতনীতি ও বৈষম্য। কেউ দীর্ঘদিন বিনা বেতনে, খেয়ে-না খেয়ে শিক্ষকতার পেশাকে আকরিয়ে ধরে রেখেছে। বলছি,সরকারের স্বীকৃতি প্রাপ্ত ও অনুমোতি প্রাপ্ত স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষকদের কথা। তারা দীর্ঘদিন চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় রয়েছে-কবে,কখন তাদের প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভূক্ত হবে। তাদের ভাগ্যের দরজা খোলবে।
তথ্য সূত্রে জানান যায়, দেশে প্রায় ৫ হাজারের মতো সরকারী স্বীকৃতি প্রাপ্ত ও অনুমোতি প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সে প্রতিষ্ঠাণগুলোতে প্রায় ১লক্ষ ২০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োজিত আছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে চাকুরী করে যাচ্ছে। কিন্ত উক্ত প্রতিষ্ঠাণগুলো এমপিও ভূক্ত না হওয়ায় জিবন-জীবিকা নির্বাহে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। কোন কোন শিক্ষক কোচিং ও প্রাইভেট পড়িছে কোন মতে জীবন চালিয়ে গেলেও বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রার্দূভাবের ফলে প্রায় ১ বছর ধরে ঘরে বসে আছে। কেউ কেউ পরিবার পরিজনের নিত্যদিনের চাহিদা মিটাতে গিয়ে দিনমজুরের কাজ করছে।
তা ছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কিন্টার্গাটেনগুলোর অবস্থা খুব নাজুক। দীর্ঘ দিন ধরে শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের আয়ের কোন সুযোগ নেই। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় করতে পারছে না। ফলে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে অক্ষম হয়ে পরেছে উক্ত প্রতিষ্ঠাণগুলোর মালিকপক্ষ। তা ছাড়া যে সকল প্রতিষ্ঠাণগুলো ভাড়ায় চালিত,সে সকল প্রতিষ্ঠাণগুলোর কর্তৃপক্ষ বাড়ি ভাড়া প্রদান করতে না পারায়; প্রতিষ্ঠাণগুলো প্রায় দেউলিয়া হওয়ার পথে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠাণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ ও শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি সরকারের সু-দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। এতে করে জাতির দুর্দিন নেমে আসবে। দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় ছেলে মেয়েরা বই-খাতা থেকে অনেক দূরে চলে গেছে এবং লেখা পড়ায় অমনুযোগী হয়ে পড়েছে। এতে বখাটে ও মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মসংস্থানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারে সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পারিবারিক কলহের প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়ে সমাজে অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং সামাজি অবক্ষয় হচ্ছে।
কুমিল্লা জেলা নন-এমপিও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণপাড়া আসাদনগর আবদুল মতিন খসরু কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন,সরকার ২০২১ সালে এমপিও ভূক্তির জন্য যে নীতিমালা দিয়েছে তা অনেক কঠিন, এই নীতিমালায় এদেশের নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণগুলো এমপিও হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার ভরসা করা যাচ্ছে না। অচিরে নীতিমালা শিথিল করে নন এমপিও শিক্ষকদের কথা বিবেচনা করে সকল প্রতিষ্ঠাণগুলো এমপিও ভূক্ত করার জন্য সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানান।
বুড়িচং ব্রাহ্মনপাড়া কলেজ শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক এম.এ হান্নান রোকন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে প্রতিষ্ঠাণগুলোতে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের অবস্থা ফরিক-মিসকিনের চেয়ে খারাপ হয়ে গেছে। আমরা না পারি দিন মজুরের কাজ করতে; না পারি সংসারের চাহিদা মিটাতে। এমন অবস্থায় আমাদের জীবনের দুঃখ দুর্দশাকে লাঘব করতে সরকারের নিকট দাবী জানাচ্ছি।

লেখক
কাজী খোরশেদ আলম
আহবায়ক
বুড়িচং প্রেস ক্লাব

শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন