বুড়িচং প্রতিনিধি:
কুমিল্লা আর্দশ সদর উপজেলার ক্যান্টমেন্ট নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি ভাড়া থেকে বুড়িচং উপজেলার মনোহর আলী ফকির বাড়ীর মৃত জাফর আলী ফকিরের ছোট ছেলে মোঃ মুমিনুল ইসলাম(৩৫) এর ঝুলন্ত লাশ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানান যায়, কয়েক মাস পূর্বে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত আসার পর কুমিল্লার আর্দশ উপজেলার ক্যান্টমেন্ট নিশ্চিন্তপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিল। গত শুক্রবার ৩০ জুলাই সকালে পারিবারিক কলহের জের ধরে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাদের মাহমুদ ইসলাম নামের ৫ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। নিহতের স্ত্রী সুমি আক্তার চার মাসের আন্তঃসত্তা বলে জানা যায়।
নিহতের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, শুক্রবার দুপুর ১২ টায় সে বাসার অন্য একটি রুমে ছিলো। আধা ঘন্টা পর তার স্বামীর রুমে এসে দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করতে থাকে। পরে পাশের বাসার ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে নিয়ে দরজার লক ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে তার স্বামীকে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এবং পুলিশকে খরব দেয়।
নিহতের মা রাবেয়া বেগম জানান, বিয়ের পর থেকে আমার ছেলে বউ আমার কাছ থেকে আলাদা থাকতো এবং আমাকে বিভিন্ন ভাবে মারধর করতো। পরবর্তীতে আমি আমার বড় ছেলে মোঃ মোসলেহ উদ্দিন ফকিরের বাসায় চলে যাই। এরই মধ্যে আমার ছেলে বউ আমাকে না জানিয়ে মাসে মাসে বাসা পরিবর্তন করতো। কয়েক মাস আগে আমার ছেলে দেশে আসার পর পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ক্যান্টমেন্ট এলাকায় নতুন করে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। এছাড়া আমার ছেলে বউয়ের সাথে গোপীনাথপুর এলাকার মনির হোসেন নামের একজন রং ব্যবসায়ীর অবৈধ সর্ম্পক ছিল। এই বিষয়টি আমার ছেলে জানার পর মনির ও আমার ছেলের বউ সুমি মিলে পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তিনি আরোও বলেন আমি প্রশাসনের নিকট আমার ছেলে হত্যার সঠিক বিচার চাই।
নিহতের বড় ভাই মোসলেহ উদ্দিন ফকির জানান, শুক্রবার দুপুরের বাড়ীর পাশের লোকের মাধ্যমে আমি জানতে পারি যে আমার ছোট ভাই মোমিনুল ইসলাম মারা গেছে। আমার ছোট ভাইয়ের বউ প্রায় সময় নির্যাতন করতো। আমি এই খবর পেয়ে মাকে আমার নিজের বাসায় নিয়ে যাই। আমার মা ছোট ভাইয়ের বউয়ের নাম শুনলেই বাঘের মতো ভয় পায়।
নিহতের শ^শুড় মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, আমি খরব পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই এবং আমার মেয়ের জামাতা মোমিনুল ইসলামকে হাসপাতালে নিতে সহযোগীতা করি। আমার জানা মতে মেয়ের সাথে জামাতার কোন ধরনের পারিবারিক কলহ নেই।
স্থানীয় মেম্বার মোঃ জহিরুল ইসলাম এবং সাবেক মেম্বার আবদুল কাদের বলেন, আমরা খরব শুনে নিহতের গ্রামের বাড়ীতে আসি। এই বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানা নেই।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে আসার পর স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে যায়। স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করার জন্য কবর খুঁড়ার পরেও সেখানে লাশ দাফন করার কাজ বন্ধ করে বাড়ীর উঠানে নতুন করে কবর খুঁেড় লাশ দাফন করা হয়। স্থানীয়রা আরোও জানান, যে সুমি আক্তারের সাথে রং ব্যবসায়ী মনিরের অবৈধ সর্ম্পক থাকার কারণেই মোমিনুল ইসলাম লাশ হয়ে বাড়ীতে ফেরত আসতে হয়েছে।
নাজিরা বাজার পুলিশ ফাড়ীর উপপরিদর্শক ফারুক আহমেদ জানান, খবর পেয়ে দুপুর ২টায় তিনি ঘটনাস্থলে যায়। পরে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
কমেন্ট করুন