1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. banglarmukh71@gmail.com : admin1 :
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ

বিশ্ব শিক্ষক দিবস এবং আমার কিছু ভাবনা

  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১
  • ৬০৬ বার পড়া হয়েছে

মোঃ জয়নাল আবেদীন
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। আর এই মেরুদন্ড তৈরি করতে সবচেয়ে বেশি যিনি ভূমিকা রাখেন তিনি হলেন শিক্ষক। শিক্ষক হলে মানুষ গড়ার কারিগর, পৃথিবীর আদিকাল থেকেই জাতি গঠনে শিক্ষকরাই ভূমিকা রেখেছেন। শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান সকল পেশা থেকে অনেক মর্যাদার।

একজন শিক্ষককে শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা অর্থাৎ অভিভাবকরাও অনেক সম্মান করে থাকেন এবং অনেক মর্যাদা দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে শিক্ষকদের সম্মান সবার ঊর্ধ্বে।

সারা পৃথিবীতে শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান এবং বাংলাদেশে শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মানের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা, এবং অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষকরা অনেক সমৃদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশে শিক্ষকরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং শিক্ষকদের জীবন মান অনেক নিম্নমানের। এর অন্যতম কারণ হলো শিক্ষকদেরকে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি না দেয়া। বাংলাদেশে শিক্ষকরা তাদের মাসিক বেতন দিয়ে পরিবার পরিচালনা করতে পারেন না। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন সহকারি শিক্ষক মাত্র ১২৫০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন, যা বর্তমান সময়ের তুলনায় অত্যন্ত নিম্নমানের স্যালারি। একজন সিএনজি চালক প্রতি মাসে আয় করেন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। যা একজন গ্র্যাজুয়েশন করা শিক্ষকের তুলনায় প্রায় ডাবল। একজন রিক্সা চালকের আয় প্রতিমাসে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা। একজন শিক্ষক এর তুলনায় অনেক বেশি।
বর্তমানে শিক্ষকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছে, পৃথিবীর কোথাও শিক্ষকদের সাথে এত বৈষম্য নেই। সকল সরকারি ও বেসরকারি চাকুরীজীবীরা শতভাগ বোনাস পেয়ে থাকেন, কিন্তু শিক্ষকদেরকে দেয়া হয় মাত্র 25 শতাংশ বোনাস। যা পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল ঘটনা। শিক্ষকদেরকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় ১০০০ টাকা। কিন্তু সরকারী ও বেসরকারী অন্যান্য কর্মজীবীদের বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় প্রায় বেতনের অর্ধেক। শিক্ষকদের সাথে মারাত্মক বৈষম্য করা হচ্ছে।
এই বৈষম্যের অবসান অবশ্যই প্রয়োজন। এই বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হলে অবশ্যই শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ব্যতীত এ সমস্যা থেকে উত্তরণ হওয়া সম্ভব নয়।
শিক্ষকদেরকে অর্থনৈতিকভাবে শৃঙ্খলিত রেখে কখনো মেধাবী জাতি গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
এমপিও বিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের তো আরো করুণ অবস্থা। তাদেরকে মাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে মাসিক বেতন দেয়া হয়। এই সামান্য বেতনে তিন মাস পর পর দেয়া হয়। এ নিয়ে তাদের একসপ্তাহের বাজার করাও সম্ভব নয়। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার যেখানে ২০১৩ সালে এক ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ করেছে, ঠিক সেভাবেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা গুলোকেও জাতীয়করণ করা প্রয়োজন।
মোট কথা হল, শিক্ষকদেরকে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি দিতে হবে, অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি দিলে আর কোন শিক্ষক ঘটনাচক্রে এ পেশায় আসবেনা। জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়েই এ পেশায় যুক্ত হবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা। আর যদি অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষকদেরকে মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে সবাই ঘটনাচক্রেই এ পেশায় আসবে।

বিশ্ব শিক্ষক দিবসের অঙ্গীকার: এই মুহূর্তে জাতীয়করণ দরকার।।

লেখক
শিক্ষক ও সমাজ কর্মী

শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন