বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটির আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় আওয়ামী লীগের ১৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে তাদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শহিদুল ইসলাম ফকির, আবুয়াল ফকির, মো: হুমায়ুন হাওলাদার, মিল্টন খান, মো: মফিজ খান, মো: ফারুক, মো: আবুল হোসেন শেখ, মো: মোদাচ্ছের শেখ, সুনীল দাস, বিশ্বনাথ ওরফে বিশ্ব প্রমানিক, মো: লিয়ন শিকদার, সুব্রত কুমার শাহ ওরফে পল্টু (পলাতক), মেহেদী ওরফে রুবেল ফকির ও মো: মহি মোল্লা।
আদালত সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে এ ট্রিপল হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ওই সময় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরের লাইসেন্স করা একটি বিদেশী সটগান, একটি রিভলবার, একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, একটি কুড়াল ও তিনটি গুলি জব্দ করে।
আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা যায়, এই বিরোধের জের ধরে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর যুবলীগ নেতা শুকুর শেখকে সেলিমাবাদ ডিগ্রি কলেজ মাঠে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর আনছার আলী দিহিদারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকেও ধরে নিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া আসামিরা আনছার আলী দিহিদারের স্ত্রী মঞ্জু বেগমকে একই দিন মারধর করে গুরুতর আহত করে। দীর্ঘ দিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২০ সালের ৩০ জুলাই তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ৪ অক্টোবর রাতে মোড়েলগঞ্জ থানায় নিহত শুকুর শেখের ভাই শেখ ফারুক হোসেন হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা আরো একটি মামলা করেন। ২০১৯ সালের ৪ জুন পুলিশ ৫৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির, ইউপি সদস্য আজিম, আল আমিন, সুনীল, শ্যাম ও মোদাচ্ছের, দৈবজ্ঞহাটি ইউপির গ্রাম পুলিশের সদস্য আবুয়াল হোসেন ফকির, আবুল শেখ ও জুলহাস ডাকুয়া। তারা সবাই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকিরের অনুসারী এবং দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক।
কমেন্ট করুন