1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. banglarmukh71@gmail.com : admin1 :
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে গোমতী চরের মাটি

  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২৫৩ বার পড়া হয়েছে
  • কুমিল্লা প্রতিনিধি

গোমতী নদীর চরে অবাধে মাটি কাটা কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না। দিনে রাতে কাটা হয় গোমতীর দুই তীরের ফসলি উর্বর মাটি। প্রকাশ্যেই ট্রাক্টরে করে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটাসহ বিভিন্ন নির্মান কাজে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পানি উন্নয়ণ বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি শক্তিশালী দপ্তরের নজরদারি থাকা সত্ত্বেও গোমতী যেন অভিভাবকহীন। অভিযানে কিছু দিন মাটিখেকোদের ধরপাকড় ও ধাওয়া করা হলেও পরিস্থিতি শান্ত হলেই আবারো শুরু হয় মাটিকাটার উৎসব। প্রশাসনে রদবদল হলেও বদল হয় না গোমতীর বুক চিরে খাওয়ার দৃশ্য। বিভিন্ন সভায় মাটি কাটা বন্ধ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে দাবি দাওয়া এখন পরিনত হয়েছে অসহায় আর্তনাদে। নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সাথে সাংবাদিকদের প্রথম মতবিনিময় সভায়ও গোমতী রক্ষার দাবি তুলেছেন সাংবাদিকরা। বিগত জেলা প্রশাসকদের মত মোহাম্মদ শামীম আলমও জানিয়েছেন, কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে রক্ষা করা হবে গোমতীকে।
কুমিল্লার আদর্শ সদর, বুড়িচং, দেবিদ্বার, দাউদকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গোমতী নদী থেকে ইজারাদার ছাড়াও অবাধে মাটি ও বালু উত্তোলন করে শতাধিক গ্রুপ সিণ্ডিকেট।
জানা গেছে, কুমিল্লার দেবিদ্বারে গোমতীর দু’পাড়ে মাটি কাটার ঘাট নিয়ন্ত্রণ করছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে  শতাধিক ঘাট থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে ওই চক্র। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়েও তাদেরকে ধরা যাচ্ছে না। গোমতীর চরে রাতদিন চলে এমন তাণ্ডব। তাদের কবলে পড়ে খরস্রোতা গোমতী নদী ধ্বংস হচ্ছে। গেলো কয়েকদিন গোমতীর দু’পাড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেঁড়ি বাঁধের উপর দিয়ে প্রায় দুই শতাধিক মাটি বোঝাই ট্রাক্টর বিভিন্ন ইটভাটায় যাওয়া আসা করছে। এসব ট্রাক্টর বিকট শব্দে নদীর ওপর নিচে ওঠানামা করায় হুমকীর মুখে পড়েছে বেঁড়িবাঁধ ও গোমতীর  সেতু। ধুলায় বিপন্ন হচ্ছে আশ-পাশের পরিবেশ। খলিলপুর,  চরবাকর, লক্ষীপুর, কালিকাপুর শিবনগরসহ প্রায় অর্ধশত ঘাট থেকে প্রায় ৩ শতাধিক ট্রাক্টর মাটি কেটে নিচ্ছে ওই চক্র। সড়ক কেটে নদীর বাঁধের ভেতর দিয়ে এসব ট্রাক্টর ওঠানামা করছে এবং এই গোমতী থেকে মাটি কেটে ব্রীজের উপর দিয়ে নেওয়ায় কালিকাপুর, লক্ষীপুর, খলিলপুর ও দেবিদ্বারের তিনটি সেতুই হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি বোঝাই ট্রাক্টর ব্রীজের ওপরে চলাচল করলে পুরো ব্রীজ প্রচণ্ড বেগে কাপুনি দেয়। এতে ধীরে ধীরে সেতুর পিলার থেকে মাটি সরে গিয়ে যে কোনো সময় দেখা দিতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দা রজব আলী, শাহ আলম ও সেতারা বেগম বলেন, ওপর মহলের সব কিছু ম্যানেজ করেই এসব করছে, শক্তিশালী চক্রটি রাজনৈতিক পশ্রয়ে দিনের পর দিন এভাবেই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। গোমতী চরের ফসলি জমি নষ্ট করছে, আমরা কিছু বললে আমাদের ভয়ভীতি দেখায়। প্রশাসন অভিযান চালালে একদিন বন্ধ থাকে তবে পরদিনই আবার মাটি কাটা শুরু হয়। এর কারণে এক সময়কার খরস্রোতা গোমতী নদী দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
দেবিদ্বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী  মো.কামাল উদ্দিন জানান, দেবিদ্বার কালিকাপুর এলাকায় থেকে যারা অবৈধ ভাবে গোমতী নদী থেকে মাটি কাটছে  একাধিক বার অভিযান চালিয়ে ট্রাক্টর আটক ও জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজই আসছে না।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বলেন, গোমতী নদীতে মাটি কাটার দায়ে ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে দুটি ট্রাক্টর জব্দ করা হয়েছে। আরও অভিযান চালানো হবে।
শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন