বুড়িচঙ প্রতিনিধি
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার জরইন গ্রামের মোসাঃ জোহরা খাতুন মনু। ভূমিহীন জোহরা খাতুনের ভাগ্য জুটেনি এক বিন্দু সুখ। ছেলেরা বড় হয়ে বিয়ে সাদী করে অন্যত্র চলে যায়। বৃদ্ধ স্বামী আবদুর রশিদ যা কিছু আয় ইনকাম করে তা দিয়ে কোনমতে চলে তাদের সংসার।
তাদের বসবাস করার মতো কোন জায়গা সম্পত্তি না থাকায় বুড়িচং উপজেলা সদর ভূমি অফিসের পিয়ন মোঃ মোসলেমের উদ্যোগে গ্রামবাসীর সহযোগীতায় জরইন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় খাস জমির উপর বসতঘর নির্মাণ করে দেন। বিগত ২০ বছর ধরে বৃদ্ধ রশিদ ও বৃদ্ধা জোহরা খাতুন মনু এই ঘরের মধ্যে বসবাস করে আসছে। বিগত ২ বছর পুর্বে তার স্বামী আবদুর রশিদ মারা যাওয়ার পর থেকে একই বাড়ির মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে কুয়েত ফেরত প্রভাবশালী কাউছার আহমেদ তিতু মিয়ার এই খাস ভূমি দখল করার ফন্দি আটতে থাকে এবং স্থানীয় কিছু লোকের সহযোগীতায় জোহরা খাতুন মনুকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে- এই জায়গা খালি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য। মনু তার কথায় কর্ণপাত না করায় গত এক সপ্তাহ পূর্বে তার বশত ঘর থেকে বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে দেয়। এতে জোহরা খাতুন মুন ঘর থেকে বের হতে না পেরে এক সপ্তাহ ধরে মানবতের জীবন যাপন করছে।
জোহরা খাতুন মনু বলেন, আমরা ২০ বছর ধরে এখানে সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছি। গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে আমাদেরকে এখানে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করার জন্য দান করেন। কিন্ত আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে কাউছার আহমেদ তিতু আমাদেরকে উচ্ছেদ করার পায়তারা করছে এবং এক সপ্তাহ আগে আমার ঘর থেকে বের হওয়ার দরজায় বেড়া দিয়ে আমাদেরকে গৃহবন্ধি করে রেখেছে। আমি স্থানীয় সাহেব সর্দারদেরকে বিষয়টি অবহিত করেছি কিন্ত প্রভাবশালী তিতু মিয়ার ভয়ে কেউ এগিয়ে আসছে না। তাই বাধ্য হয়ে বুড়িচং উপজেলা সহকারী কশিনার ভূমির কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
এই বিষয়ে কাউছার আহমেদ তিতু মিয়া বলেন, আমার চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে আমি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে এই জমি ক্রয় করেছি। যেহেতু আমি এই জায়গা ক্রয় করেছি সেহেতু পাশের খাস জমিও আমার। আমি আমার জায়গা উদ্ধার করার জন্য বেড়া দিয়েছি। এই খাস জমি উদ্ধার করার জন্য আমি প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব।
স্থানীয়রা বলেন, জোহরা খাতুন মনু ও তার স্বামীকে ২০ বছর পূর্বে গ্রামবাসি মিলে মিশে এই জায়গায় বসবাস করার জন্য অনুমতি দেন। কিন্ত তিতু মিয়া জোরপূর্বক তাদের জায়গা দখল করতে চায়। এটা অন্যায়।
বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শারমিন আরা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কমেন্ট করুন