প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ভারত সীমান্তে গত ১৮ বছরে ১ হাজার ১শত চুয়াল্লিশ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘করোনা ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এতথ্য জানায় দলটি।
বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ভারতের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে কমপক্ষে এক হাজার ১৪৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালে সীমান্তে ৪৩ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্ত হত্যা বেড়েছে ১২ গুণ।
লিখিত বক্তব্য আর বলা হয় ,ভারতের সাথে ৬টি দেশের স্থল সীমান্ত রয়েছে। এ দেশগুলো হল পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। আর ভারতের সমুদ্র সীমান্ত রয়েছে শ্রীলংকার সাথে। আমরা এও জানি, এই সবগুলো দেশের সীমান্তেই ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ মোতায়েন আছে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য ৫টি দেশের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে কোনো লোক নিহত হওয়ার কোনো খবর কিন্তু চোখে পড়ে না।
সকল হত্যাই অপরাধ। কিন্তু এরমধ্যে কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশসহ বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচিত হয়ে আছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তের খিতাবেরকুঠি এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর লাশ পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল। ফেলানী হত্যার বিষয়টি সকলইে জানেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবসে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্ত এলাকায় জাহিদুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এটিও গণমাধ্যে এসেছে। করোনাকালেও মানুষ হত্যা বন্ধ হয়নি। সীমাল্জে শুধু হত্যা নয় এখন হচ্ছে বাংলাদেশের নারীদের ধর্ষণ। এ
আমাদের বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে। গত ৩০ জুলাই এ বিষয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো প্রক করেছে। এরসঙ্গে রয়েছে মানব পাচারসহ চোরাচালানের ঘটনা।
সীমান্ত আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সকল ধরনের চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরেপ করতে হবে। জনগণকে শতভাগ টিকার আওতায় আনতে হবে। বর্তমানে আফগানিস্তানের নতুন সরকারের সাথে ভারতের বৈরি সম্পর্ক বিশ্ববাসী দেখেছে। তার কোনো প্রভাব যেন আমাদের সীমান্তে না হয় সেদিকেও সরকার কঠোর হতে হবে।
বৈঠকে সরকারের উদ্দেশ্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ধানাই-পানাই বাদ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেন। এবং ভারত সীমান্ত বন্ধ করে দেন। ভিসা বন্ধ করেন তা নাহলে করোনা আর বেড়ে যাবে।
শেখ হাসিনা ভুলের পর ভুল করে যাচ্ছে মন্তব্য করে এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ বলেন, বিএনপি কর্মীরা নতুন দায়িত্ব পেয়েছে তাদের নেতাকে শ্রদ্ধা জানাবে। সেখানে কেন আপনারা পুলিশ দিয়ে পেটাবেন। এই ধরনের কাজ গুলো আপনারা খুব খারাপ করছে। যে পুলিশকে দিয়ে আজকে তাদের পেটাচ্ছেন একদিন দেখলাবেন এই পুলিশ ঘুরে দাঁড়াবে। এইসব বন্ধ করেন।’
গোল টেবিল বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজকে চন্দ্রিমা উদ্যানে ছাত্রদল ও পুলিশ সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, যেকোন দলের কর্মীরা তাদের নেতার কবরে মাজারে ফুল দিতে যায়। এটা স্বাভাবিক। তাতে তাদের পিটাতে হবে, গুলি করতে হবে এই রকম ঘটনা কখনও দেখিনি। আপনারা সীমান্ত বন্ধ করতে পারেন না। সীমান্ত দিয়ে ভাইরাস নিয়ে মানুষ ঢুকে যায়, সেটা বন্ধ করতে পারেন না। কেবলমাত্র বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন করতে পারেন। আপনাদের উন্নয়ন মানে অত্যাচারী উন্নয়ন। এসমস্ত উন্নয়ন আমাদের শোনানোর দরকার নেই।
এসময় ছাত্রদের কে আহবান করে মান্না বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আপনারা যার যার মত শিক্ষদের অনুরোধ করে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, করোনার ৩য় ঢেও রুখতে ভারত সীমান্ত বন্ধ করা উচিত। তা নাহলে দেশের মানুষদেরকে করোনা থেকে বাচানো যাবে না। ভারতের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট মোকাবেলায় অবিলম্বে ভিসা কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করা উচিত। ভারত বন্ধু নয় প্রভুর মতো আচরন করছে। বাংলাদেশ ছাড়া পার্শ্ববতী কোন দেশের সাথে ভারতের সুর্স্পক নেই।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, লেবার পার্টির মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, মুক্তিযোদ্ধা দলের শহিদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, গণস্বাস্থ উপদেষ্টা জাহাংগীর আলম মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমাউন কবীর, এনডিএম সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান হীরা, ছাত্র অধিকার পরিষদের ফারুক হোসাইন, যুব মিশনের আহবায়ক ইমরুল কায়েস, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম প্রমুখ। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সংরক্ষন সংস্থার সভাপতি এডভোকেট জহুরা খাতুন জুঁই।
কমেন্ট করুন