নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে নিমার্ণকাজ করায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের ময়দানের পাড় হতে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত দুই হাজার ৩১৫ মিটার সড়ক নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের খোয়া। এ ঘটনায় বাহাগিলি ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দফতরের ওয়ার্ক অ্যাসিসটেন্ট হাদিউজ্জামান হাদির যোগসাজসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়ার্ক অ্যাসিসটেন্ট বলেন, আমি নিষেধ করার পরেও ঠিকাদার সড়কে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করেছেন। এতে আমার কোনো দোষ নেই। তবে তার দাবি ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল দফতর থেকে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাহাগিলি ইউনিয়নের ময়দানের পাড় হতে বাহাগিলি ইউপির নান্নুর বাজার পর্যন্ত দুই হাজার ৩১৫ মিটার সড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় ঠাকুরগাঁও জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোকছেদুল এন্টারপ্রাইজ।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের দুই দিকে এজিংয়ে পুরোনো ইট বিছিয়ে ও রোলিং করে নিম্নমানের সালটু ইটের খোয়া ব্যবহার করে ডাব্লিউভিএম করছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সড়ক নির্মাণকাজের সময় একজন তদারকি কর্মকর্তা উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নির্মাণকাজের তদারকি কর্মকর্তা নিশাত আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সড়ক নির্মাণকাজে এক নম্বর ইট দিয়ে সড়কের দুই দিকে এজিং করতে হবে। এরপর বালু ফেলে পানি ছিটিয়ে সঠিকভাবে মজবুতিকরণ করতে হবে। পিকেট ইটের খোয়া বিছিয়ে ডাব্লিউভিএম করতে হবে। ঠিকাদার এসব নিয়ম না মানায় এবং আমার নিষেধ উপেক্ষা করে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করায় আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়ে ওই কাজের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিয়েছি।
বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আনছার আলী, তাইজুল, ময়নুল, আব্দুল রহিম উদ্দিনসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কের কাজ করার ফলে সড়কটির স্থায়ীত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।
বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজাউদ্দোলা লিপটন বলেন, আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বার বার বলার পরেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমি নিম্নমানের খোয়া উঠিয়ে ভালো খোয়া দিয়ে পুনরায় সড়কের কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মোকছেদুল ইসলাম নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের বিষয় স্বীকার করে বলেন, ভুল করে পাঁচ ট্রাক খারাপ খোয়া আনা হয়েছে, তবে সেগুলো এতটা খারাপ না। খারাপ খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন অফিসের সাথে কথা বলেই তারপর সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান জানান, এ বিষয়ে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
কমেন্ট করুন