গুজরাট দাঙ্গার সময় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানু দণ্ডিতদের জেল থেকে আগাম মুক্তি দেয়ার বিরুদ্ধে যে আবেদন (রিভিউ পিটিশন) করেছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট শনিবার তা খারিজ করে দিয়েছে।
গত ১৫ অগস্ট বিলকিস বানু ধর্ষণ মামলায় ১১ জন দণ্ডিতকে ছেড়ে দেয় গুজরাট সরকার। যারা জেলে ১৫ বছরের বেশি ছিল। ভারতের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে সেই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন বিরোধী নেতারা। তারই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেন বিলকিস। নিজের আবেদনে বিলকিস দাবি করেন, শীর্ষ আদালতের নিয়ম লঙ্ঘন করে ওই ১১ জন ধর্ষককে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাট সরকার। যা সমাজের ‘বিবেক নাড়িয়ে গিয়েছে’ বলে দাবি করেন বিলকিস।
ওই পিটিশনে ধর্ষণের বিস্তারিত বিররণ তুলে ধরেছিলেন তিনি। বিলকিস দাবি করেন, ১১ জন ধর্ষককে ছেড়ে দেয়ার খবরে হতবাক গেছেন তারা (বিলকিস ও তার মেয়েরা)।
পিটিশনে বলা হয়েছিল, ‘দেশ যখন ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছিল, তখন সব দণ্ডিতদের আগাম মুক্তি দেয়া হয়েছে। প্রকাশ্যে তাদের মালা পরানো হয়েছিল। দেয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল। তা থেকেই বর্তমান মামলাকারী (বিলকিস), পুরো দেশ ও দুনিয়া জানতে পারে যে দেশের অন্যতম জঘন্য অপরাধে দণ্ডিতদের আগাম মুক্তি দেয়া হয়েছে। যে ঘটনায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গার সময় (গোধরা ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের পর) গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বিলকিস। সেই সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। তার বয়স ছিল ২১ বছর। সেইসাথে তার তিন বছরের মেয়েসহ পরিবারের সাতজনকে খুন করা হয়েছিল।
সেই ঘটনার তদন্ত সিবিআইকে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মুম্বাইয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সেই মামলা সরিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। অবশেষে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। সেই সাজার মেয়াদ বহাল রেখেছিল বম্বে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট।
কমেন্ট করুন