দাউদকান্দির ঐতিহ্যবাহী গৌরীপুর বাজারকে যানজট মুক্ত করতে প্রশাসন ও ৭টি সামাজিক সংগঠনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে। কুমিল্লা জেলার মধ্যে এটি একটি অন্যতম বৃহত্তম বাজার। এই বাজারটিতে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঢাকা-হোমনা-গৌরীপুর সড়কটি এই বাজারের মাঝখান দিয়ে যাওয়ায় যানজট অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে। বিশেষ করে এই পথে রোগী, ওষধপত্র ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মালামাল বহনকারী গাড়ীগুলো ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকে। এমনও দেখা গেছে, যানজটের কবলে পড়ে হাসপাতালের নেওয়ার আগেই কোন কোন রোগী মারা গেছে। তাছাড়া এই যানজটের কারণে বাজারের ব্যবসায়ীরাও আর্থিকভাবে বিরাট ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। নিত্যদিনের এসব সমস্যা সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন দীর্ঘদিন চেষ্টা করলেও এর সমাধান হয়নি। যার ফলে স্থানীয় সুশীল সমাজ সংগঠন, প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট, ‘সৃষ্টি’ সংগঠন, ব্লাড ডোনার্স গৌরীপুর, দড়িকান্দি ভিশন-২০২৫, মৌটুপি সমাজ কল্যাণ সংগঠন, জিয়ারকান্দি সমাজ কল্যাণ সংগঠন সর্বোপরী নিরাপদ চিকিৎসা চাই কুমিল্লা জেলা কমিটির পক্ষ হতে যানজট নিরসনে কাজ শুরু করে স্বেচ্ছাসেবীরা। টানা প্রায় দুই মাস ধরে প্রশাসনের পাশাপাশি এসব সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টায় যানজট অনেকাংশে কমে এসেছে। সর্বশেষ ১৪ মার্চ প্রশাসন ও বাজার কমিটির উদ্যোগে সড়কে বসা রবিবারের কাঠ বাজারটি স্থানান্তর করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে বিশেষ করে রবিবারের মহাযানজট থেকে মুক্তি পাবে এই পথের লক্ষ লক্ষ মানুষ এবং বাজারের সিংহভাগ যানজট নিরসন হবে বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন। সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানে এবং সুবিধার কথা চিন্তা করে, রবিবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মোঃ জুয়েল রানার নেতৃত্বে, গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলাম, গৌরীপুর বাজার কমিটির সেক্রেটারি মোঃ নোমান সরকারকে সাথে নিয়ে সড়কের পাশে থাকা কাঠ বাজারটি স্থানান্তরের নির্দেশ প্রদান করেন। এ ব্যাপারে নিচিচা কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক-কবি আলী আশরাফ খান বলেন,’ আমরা স্থানীয় ৭টি সংগঠনের ৩০/৩৫ জন স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে পর্যায়ক্রমে গৌরীপুর বাজারের যানজট নিরসনে প্রায় ২ মাস যাবৎ কাজ করে যাচ্ছি। প্রশাসন ও বাজার কমিটি আমাদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন হাটবার অর্থাৎ রবিবারে রাস্তার দু’পাশে বসা কাঠের দোকানগুলো স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তবে গৌরীপুর বাজারের যানজট নিরসনে আমরা প্রশাসনের বরাবরে কয়েকটি প্রস্তাব দিতে চাই। যেমন, গৌরীপুর বাজার তথা গৌরীপুর-হোমনা সড়কের দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকরণ, ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনা বন্ধকরণ, নির্ধারিত জায়গা ব্যতীত গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধকরণ, সিএনজি-অটোরিক্সার জন্য নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা করা, সিএনজি ও অটোরিকশার সংখ্যা সীমিতকরণ, শিশুচালকদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সকল চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা চালানো। আর এসব বিষয়সমূহে যে কোন সহযোগিতা করতে স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত বলে তিনি জানান।
কমেন্ট করুন