স্টাফ রিপোর্টার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগের বাধায় নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৯টার দিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট পদে টাইপিং টেস্ট পরীক্ষার সময় এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা বাধা প্রদান করলে পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকেলে এই পরীক্ষাসহ আরো কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট হিসেবে একটি পদের বিপরীতে ২৬৬ জন প্রার্থী টাইপটেস্টের জন্য সকাল সাড়ে ৯টায় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে উপস্থিত হন। পরীক্ষা বোর্ডের আহ্বায়ক ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এইচ এম আলী হাসান ও সদস্য সচিব ছিলেন উপ-রেজিস্টার চন্দন কুমার দাস। এছাড়া বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরীক্ষার সময় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা এসে বাধা প্রদান করেন এবং পরীক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেন। পরে পরীক্ষার আহ্বায়ক এইচ এম আলী হাসান সেখান থেকে চলে যান। পরীক্ষার্থীরা বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও পরীক্ষাগ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। বিকেলে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষাসহ আগামী ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর আউকিউএসি ও ফাইন আর্টস বিভাগ এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক পরীক্ষার্থী।
তারা বলেন, প্রশাসন চাইলে পরীক্ষা নিতে পারতো। অনেক দূর থেকে কষ্ট করে এসে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে দুর্নীতি হওয়ায় আমরা নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের সাথে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা যায়নি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, `যারা পরীক্ষা স্থগিত করেছে তারা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী, তারা দীর্ঘ দিন ধরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করে আসছিল। বর্তমান কমিটির কেউ সেখানে ছিল না। তবে ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের বর্তমান কিছু নেতাকর্মীকে দেখা গেছে।`
নিয়োগ পরীক্ষার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, `আমি পরীক্ষাস্থলে যাওয়ার আগেই শুনেছি কিছু ছেলেপেলে পরীক্ষা নিতে বাধা দেয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।`
রেজিস্টার এইচ এম আলী হাসান বলেন, `অনিবার্য কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই।`
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, `কিছু ছাত্রনামধারী দুষ্কৃতকারী পরীক্ষায় বাধা দিয়েছে। আমাদের কার্যক্রম ব্যহত হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবো।`
কমেন্ট করুন